Tab er Taka: প্রত্যেক ছাত্র-ছাত্রীর উন্নতিকল্পে সরকারের তরফ থেকে নানানরকম সহযোগিতা করা হয। কখনো পিছিয়ে পড়া অভাবী ছাত্র-ছাত্রীদেরকে বৃত্তি প্রদানের মাধ্যমে আর্থিকভাবে সহযোগিতা করা হয়, কখনো আবার নানানরকম প্রকল্পের মাধ্যমে ছাত্র-ছাত্রীদের সহযোগিতার হাত বাড়িয়ে দেয় সরকার, যাতে কোনোভাবেই ছাত্রছাত্রীরা পড়াশোনায় পিছিয়ে না পড়ে। পশ্চিমবঙ্গ সরকারের তরফ থেকে ছাত্র-ছাত্রীদের জন্য ইতিমধ্যে নানান প্রকল্প চালু করা হয়েছে, যার মাধ্যমে অনেকেই উপকৃত হয়েছেন। রাজ্য সরকারের এমনই একটি প্রকল্প হলো “তরুনের স্বপ্ন” (Taruner Swapna) প্রকল্প, যাতে প্রত্যেক ছাত্র-ছাত্রীকে ট্যাবলেট বা মোবাইল কিনে ডিজিটাল মাধ্যমে পড়াশোনার জন্য উচ্চ মাধ্যমিক স্তরে এককালীন ১০ হাজার টাকা দেওয়া হয়।
শিক্ষা দফতর ১৫০০ কোটি টাকা বরাদ্দ করেছে
করোনা মহামারীর সময় থেকে দ্বাদশ শ্রেণির পড়ুয়াদের ট্যাব দেওয়া শুরু করে রাজ্য সরকার, কিন্তু এবারে খরচের পরিমাণ অনেকটাই বেশি। এর কারণ হলো এখনো পর্যন্ত আগের বছরের টাকা পড়ুয়াদের দেওয়া হয়নি। মুখ্যমন্ত্রীর ঘোষণা অনুযায়ী, এই বারে তাই একাদশের পড়ুয়াদের একইসঙ্গে অনেকটা টাকা দেওয়া হবে। শিক্ষা দফতর, এই বছর একাদশ ও দ্বাদশ শ্রেণির পড়ুয়াদের ট্যাব দিতে আনুমানিক ১৫০০ কোটি টাকা খরচ করছে (Tab er Taka)। বর্তমানে যেখানে পরিকাঠামোগত অভাবের কারণে রাজ্যের বহু সরকারি স্কুল মৃতপ্রায়, স্কুলে শিক্ষক নেই, সেখানে এই বিপুল অর্থের খরচ নিয়ে উঠছে নানান প্রশ্ন।
শিক্ষকরা কী বলছেন?
বহু শিক্ষক মনে করেন যে, আধুনিক শিক্ষাব্যবস্থায় ট্যাব প্রয়োজনীয় হলেও ঠিকঠাক ক্লাস-ঘর, আধুনিক ল্যাবরেটরি প্রয়োজন। আর যেখানে ন্যূনতম পরিকাঠামোর অভাবে ছাত্র-ছাত্রীরা আধুনিক শিক্ষা থেকে বঞ্চিত সেখানে এই ট্যাবের জন্য ১০ হাজার টাকা দেওয়া বিলাসিতা ছাড়া আর কিছু নয়। কিছু শিক্ষক ও সংগঠন মনে করে, ট্যাবের থেকে স্কুলে কম্পিউটার ল্যাবরেটরি এবং মিড-ডে মিলের বরাদ্দ বাড়ানো বেশি জরুরি, আর বিশেষ করে এই টাকায় স্কুলের পরিকাঠামো উন্নয়ন করা যেত। সরকার দ্বারা বরাদ্দ করা ১৫০০ কোটি টাকা ট্যাবের জন্য না দিয়ে তার পরিবর্তে কম্পিউটার ল্যাবরেটরি, ডিজিটাল ল্যাবরেটরি এবং স্মার্ট ক্লাসরুম তৈরির কাজে ব্যবহার করলে বেশি উপযোগী হতো।
শিক্ষা দফতর কী বলছে?
চলতি বছর মাধ্যমিক পরীক্ষার্থীর সংখ্যা ছিল ৭ লক্ষ ৬৫ হাজার ২৫২ জন। উচ্চ মাধ্যমিক শিক্ষা সংসদ অনুসারে, এইবছর একাদশ ও দ্বাদশ মিলিয়ে প্রায় ১৫ লক্ষ শিক্ষার্থী রয়েছে, যাদের প্রত্যেকের অ্যাকাউন্টে ১০ হাজার টাকা করে দেওয়ার জন্য সরকার ১৫০০ কোটি টাকা খরচ করছে। শিক্ষা দফতরের মতে, বর্তমান এই ডিজিটাল যুগে সকল শিক্ষার্থীর হাতে মোবাইল কিংবা ট্যাব থাকা প্রয়োজন। অনলাইন ক্লাস এবং উচ্চ শিক্ষার জন্য মোবাইল কিংবা ট্যাব জরুরি, তবে অনেক শিক্ষক বলছেন, স্কুলে মোবাইল আনা নিষেধ, অথচ তাও সরকার চার ছাত্রীদের ট্যাব দিচ্ছে। জানা গেছে যে, আগামী আগস্ট থেকে সেপ্টেম্বর মাসের মধ্যেই শিক্ষার্থীর অ্যাকাউন্টে ট্যাবের টাকা দেওয়া শুরু হয়ে যাবে (Tab er Taka)।