News Desk : UPSC পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হওয়া কিন্তু সহজ নয়, কারণ লক্ষ লক্ষ পরীক্ষার্থী এই পরীক্ষার জন্য প্রস্তুতি নেয় এবং তাদের মধ্যে মাত্র কিছুজন পরীক্ষার্থী সাফল্য পায়। এই পরীক্ষায় এমন অনেকগুলো ধাপ রয়েছে যে কঠোর পরিশ্রমের পাশাপাশি আপনার ধৈর্যও থাকা উচিত। এই পরীক্ষাকে দেশের অন্যতম কঠিন পরীক্ষা হিসেবে বিবেচনা করা হয়। আজ আমরা আপনাদের একজন মহিলা অফিসার সম্পর্কে বলতে চলেছি যিনি সংকটের সময়ে নিজের লক্ষ্য স্থির রেখে তা পূরণ করতে পেরেছেন। আমরা কথা বলছি উত্তরাখণ্ডের দেরাদুনের আরতি ডোগরার সম্পর্কে। কম উচ্চতার কারণে নানান কটুক্তি শুনতে হয়েছে তাকে, কিন্তু সবকিছু উতরে আজ তিনি একজন সফল আইএএস অফিসার। আসুন জেনে নেওয়া যাক আরতির সাফল্যের গল্পটি। কথায় আছে রূপ দেখে কারোর গুণ বিচার হয় না আবার বয়স যেমন একটা সংখ্যা মাত্র কোনো মানুষের উচ্চতাও কিন্তু একটি সংখ্যাই মাত্র। তাই কারোর মেধা কে কখনো রূপ কিংবা উচ্চতা দিয়ে বিচার করা সম্ভব নয়। ভারতীয় সিভিল সার্ভিস চাকরি করা একটি স্বপ্নের মতো। আর সেই স্বপ্নই পূরণ করে দেখিয়েছেন আরতি ডোগরা।
জন্ম ও শিক্ষা
উত্তরাখণ্ডের দেরাদুন জেলায় জন্মগ্রহণ করেন আরতি ডোগরা। আরতির বাবা সেনাবাহিনীর কর্নেল এবং মা ছিলেন স্কুলের প্রধানশিক্ষিকা। শৈশবেই চিকিৎসক বলে দিয়েছিলেন শারীরিক দিক থেকে আরতি বাকি পাঁচ জন শিশুর মতো হবেন না। বয়সের সঙ্গে সঙ্গে বাড়বে না তার উচ্চতা। চিকিৎসকের কথা মতো তার উচ্চতা থেমে গেছে ৩ ফুট ২ ইঞ্চিতেই। তবে, আরতির মেধাকে আটকে রাখা যায়নি। আরতি ডোগরা প্রমাণ করে দিয়েছেন বয়সের মতো উচ্চতাও একটা সংখ্যা মাত্র। আরতি ডোগরা দিল্লির লেডি শ্রীরাম কলেজ থেকে অর্থনীতিতে স্নাতক হন। স্নাতকোত্তর করতে চলে যান দেহরাদূন। সেখানেই তাঁর সঙ্গে আলাপ হয় আর এক আইএএস অফিসার মনীষার। সেখান থেকেই নতুন করে স্বপ্ন দেখা শুরু হয় আরতির। এরপর তাঁর একমাত্র লক্ষ্য হয় ইউপিএসসি পরীক্ষা। এরপর শুরু করে পরীক্ষার প্রস্তুতি এবং সকলকে চমকে দিয়ে প্রথম চেষ্টাতেই তার সাফল্য আসে। তার শারীরিক খর্বতা ঢাকা পড়েছে তার মেধার আলোয়।
কর্মজীবন
২০০৬ সালে, আরতি UPSC পরীক্ষায় ৫৬তম স্থান অর্জন করেছিলেন। তিনি রাজস্থান ক্যাডারের আইএএস অফিসার হিসেবে কাজ শুরু করেন। আরতি ডোগরা বিকানের এবং আজমীরের কালেক্টরও হয়েছেন। তার কাজের কারণে তিনি ভারতের প্রধানমন্ত্রী শ্রী নরেন্দ্র মোদির ভক্তও হয়ে ওঠেন। আরতি ডোগরা তার বলিষ্ঠ নেতৃত্ব এবং কাজের শক্তিতে যোধপুর ডিসকমের পরিচালক পদে নিযুক্ত হওয়ার গৌরব অর্জন করেছেন, যেখানে তিনি প্রথম মহিলা আইএএস। তিনি ‘বুঙ্কো বিকানো’ প্রচারাভিযান শুরু করেছিলেন। এই গুরুত্বপূর্ণ কর্মসূচির সাফল্যের পর তিনি জাতীয় ও রাজ্য স্তরে অনেক পুরস্কারও পেয়েছেন।
সকলের অনুপ্রেরণা
আরতি ডোগরার গল্প আমাদের শেখায় যে সাফল্য কখনো রূপ দিয়ে নয় গুণ দিয়ে আসে, আর সঠিক পথ অনুসরণ করে, ধৈর্য্য, কঠোর পরিশ্রম এবং দৃঢ় সংকল্পবদ্ধ থাকার মাধ্যমে আমরা যেকোনো অসুবিধাকে অতিক্রম করতে পারি এবং আমাদের লক্ষ্য অর্জন করতে পারি। তিনি আজ সকলের অনুপ্রেরণা।