News Desk: দেশের লক্ষ লক্ষ মানুষ সিভিল সার্ভিসের জন্য প্রস্তুত এবং অফিসার হওয়ার স্বপ্ন দেখেন। স্বপ্নগুলোকে সত্যি করতে দিনরাত কঠোর পরিশ্রম করেন। এমনকি স্বপ্নকে সত্যি করতে কিছু যুবক, দিল্লি, প্রয়াগরাজ, বারাণসী এবং অন্যান্য শহরে ব্যয়বহুল কোচিং নিয়ে নিজেদের প্রস্তুত করেন। তবে এমনও কিছু পরীক্ষার্থী আছেন, যারা কোনো প্রকার কোচিং ছাড়াই এই কঠিন পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হন। এর মধ্যে রয়েছে ছত্তিশগড়ের বাসিন্দা শ্রদ্ধা শুক্লা, যিনি কোনরকম কোচিং না নিয়েই সিভিল সার্ভিস পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হয়ে আইএএস অফিসার হয়েছেন৷ শ্রদ্ধা শুক্লা আজ হাজার হাজার মানুষের অনুপ্রেরণা হয়ে উঠেছেন। আসুন জেনে নেওয়া যাক শ্রদ্ধা শুক্লার সাফল্যের গল্পটা।
আইএএস অফিসার শ্রদ্ধা শুক্লার জন্ম ও শিক্ষা
শ্রদ্ধা শুক্লা মূলত ছত্তিশগড়ের রাজধানী রায়পুরের বাসিন্দা। তিনি রায়পুরের গায়ত্রী নগরের এমজিএম উচ্চ মাধ্যমিক বিদ্যালয় থেকে দ্বাদশ শ্রেণী পর্যন্ত পড়াশোনা করে। এরপর স্কুলের পড়া শেষ করে তিনি সরকারি ডিবি গার্লস পিজি কলেজে বিএসসিতে ভর্তি হন। এখান থেকে তিনি স্নাতক ডিগ্রী সম্পন্ন করেন। এর পর তিনি UPSC-এর জন্য প্রস্তুতি নিতে শুরু করেন।
কোচিং ছাড়া নিজেই নিয়েছেন প্রস্তুতি
অনেকে মনে করেন UPSC পরীক্ষার জন্য ব্যয়বহুল কোচিং ক্লাসে ভর্তি হওয়া খুব প্রয়োজন, নাহলে সিভিল সার্ভিস পাস করা খুবই কঠিন। তবে, এই ধারণাকে একেবারে ভুল প্রমাণ করেছেন শ্রদ্ধা। ব্যয়বহুল কোচিংয়ে ভর্তি হওয়ার পরিবর্তে তিনি নিজেই বাড়িতে বসে UPSC-এর জন্য প্রস্তুতি নেন। তিনি তাঁর প্রথম প্রচেষ্টায় ব্যর্থ হন, কিন্তু এরপরেও হাল ছাড়েননি। ব্যর্থ হয়েও ভেঙে না পড়ে, কোচিংয়ে ভর্তি না হয়ে, বাড়িতে থেকে ফের ভালোভাবে প্রস্তুতি নেন। এরপর দ্বিতীয়বার পরীক্ষা দেন IAS হওয়ার লক্ষ্যে, কিন্তু তাতেও হতে হয় ব্যর্থ। শ্রদ্ধা ভারতীয় ডাক ও টেলিযোগাযোগ বিভাগে আর্থিক পরিষেবার চাকরি পেয়েছিলেন, তবে তিনি তখনও কোনো কোচিংয়ে ভর্তি হননি, নিজের মতো করে প্রস্তুতি চালিয়ে গেছেন।
শ্রদ্ধা তৃতীয় প্রচেষ্টায় পেয়েছেন ৪৫তম স্থান
শ্রদ্ধা শুক্লা সম্পূর্ণ প্রস্তুতি নিয়ে ২০২১ সালে তৃতীয় প্রচেষ্টায় সফল হন এবং ৪৫তম স্থান পেয়ে হয়েছিলেন আইএএস অফিসার। শ্রদ্ধার জানান যে, তাঁর বাবা তাঁকে প্রস্তুতির সময় অনেক সাহায্য করেছিলেন। তাঁর বাবা সুশীল আনন্দ শুক্লা ছত্তিশগড় কংগ্রেসের যোগাযোগ বিভাগের প্রধানের পদে রয়েছেন। যখনই শ্রদ্ধার কোনো বিষয়ে কোনো দ্বিধা ছিল, শ্রদ্ধা তাঁর বাবার সাথে বিষয়টি নিয়ে কথা বলতেন। ব্যর্থতার সময়ে তিনি তাঁর পরিবারের কাছ থেকে সহযোগিতা পেয়েছেন।
ইন্টারভিউতে গেয়েছিলেন রাষ্ট্রীয় সঙ্গীত
শ্রদ্ধার UPSC ইন্টারভিউর সময় একটি বিশেষ ঘটনা ঘটেছি। প্যানেল যখন তাঁকে নিজের সম্পর্কে জিজ্ঞাসা করেছিল, তখন শ্রদ্ধা তাঁর রাষ্ট্রীয় সংগীত আবৃত্তি করেছিলেন। এটি ছিল রাষ্ট্রীয় গান ‘অর্পা পরী কে ধর’, যা শোনার পরে প্যানেল এর অর্থ জিজ্ঞাসা করেছিল। তখন শ্রদ্ধা গানটির অর্থ ব্যাখ্যা করেছিলেন। শ্রদ্ধা ইউপিএসসি পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হয়ে রাজ্যের খ্যাতি এনে দিয়েছে। তিনিই ছিলেন প্রথম টপার, যিনি সারা দেশে সেরা ৫০-এ জায়গা করে নিয়েছেন। আর আজ তিনি সকলের অনুপ্রেরণা।