News Desk : আপনি নিশ্চয়ই অনেক সাফল্যের গল্প শুনেছেন, কিন্তু আজ আমরা যে গল্পটি আপনাকে বলতে চলেছি, তা হলো সব সংগ্রাম কাটিয়ে হিন্দি মিডিয়ামে পড়াশোনা করা একটি মেয়ের সাফল্যের গল্প (Success Story)। ইউপিএসসি (UPSC) পরীক্ষাকে এমন একটি কঠিন পরীক্ষা বলে মনে করা হয়, যাতে মানুষ সাফল্যের জন্য ছাতক পাখির মতো চেয়ে থাকে। কিছু প্রার্থী ভাগ্যের করে এবং কঠোর পরিশ্রমে সাফল্য পায়। কেউ আবার অনেক অপেক্ষার পর ফল পায়। আজ আমরা মধ্যপ্রদেশের একটি ছোট জায়গা খারগোনের গরিমার (IAS Garima) সাফল্যের গল্প বলতে চলেছি। Success Story
গরিমার শিক্ষা
গরিমা ছেলেবেলা থেকেই একজন মেধাবী ছাত্রী ছিলেন। তার সাফল্যের যাত্রা এত সহজ ছিল না। জীবনের নানা বাধা কাটিয়ে তিনি আজ এই সাফল্য (Success Story) অর্জন করেছেন। গরিমা সেইসকল প্রার্থীদের জন্যও একটি মহান অনুপ্রেরণা, যারা মনে করেন যে, হিন্দি মিডিয়ামে পড়াশোনা করলে তা কর্মজীবনে বাধা হয়ে দাঁড়াতে পারে। গরিমা দশম শ্রেণীতে ৯২ শতাংশ নম্বর এবং দ্বাদশ শ্রেণীতে ৮৯ শতাংশ নম্বর পেয়েছিলেন। শুধু তাই নয়, বোর্ডের চমৎকার ফলাফলের কারণে তিনি রোটারি ইন্টারন্যাশনাল ইয়ুথ এক্সচেঞ্জ প্রোগ্রামের অধীনে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের মিনেসোটায় এক বছরের উচ্চ মাধ্যমিক শিক্ষা সমাপ্ত করার সুযোগ পান। Success Story
প্রথম চেষ্টাতেই ইউপিএসসি সফল
স্কুলের শিক্ষা সমাপ্ত করার পর গরিমা JEE দিয়ে নির্বাচিত হন। এরপর তিনি আইআইটি হায়দ্রাবাদ থেকে স্নাতক এবং জার্মানি থেকে ইন্টার্নশিপ করেন। তিনি এখানে একটি চাকরির প্রস্তাবও পেয়েছিলেন, কিন্তু তিনি সর্বদা সমাজসেবা করতে চেয়েছিলেন, তাই তিনি এই চাকরির প্রস্তাব প্রত্যাখ্যান করেন। প্রায় দেড় বছর ধরে পরীক্ষার জন্য প্রস্তুতি নেওয়ার পর গরিমা ২০১৭ সালে প্রথমবার ইউপিএসসি পরীক্ষায় অংশ নিয়েছিলেন এবং প্রথম প্রচেষ্টায় নির্বাচিত হন।
২৪১তম স্থান অর্জন
গরিমা ২৪২তম স্থান অর্জন করেন এবং আইপিএস হন। গরিমা তার সাফল্যে সন্তুষ্ট ছিলেন, কিন্তু তিনি আইএএস হতে চেয়েছিলেন। তাই তিনি আবার ইউপিএসসি পরীক্ষায় অংশগ্রহণ করার সিদ্ধান্ত নেন। গরিমার কঠোর পরিশ্রমের কারণে পরের বছর, অর্থাৎ ২০১৮ সালে ইউপিএসসি পরীক্ষায় ৪০তম স্থান অর্জন করে উত্তীর্ণ হন এবং তার শৈশবের স্বপ্ন পূরণ হয়। গরিমার হিন্দি মাধ্যম স্কুলের ছাত্রী ছিলেন, তাসত্ত্বেও তিনি ইংরেজিতে পরীক্ষা দেন। ইঞ্জিনিয়ারিংয়ে তাকে খুব বেশি ভাষার সমস্যার সম্মুখীন হতে হয়নি, কারণ এখানে বেশিরভাগই গণনা বা কোডিং ছিল। তবে, ইউপিএসসি মেইনস ছিল তার কাছে সবচেয়ে বড় চ্যালেঞ্জ, যা কাটিয়ে উঠতে তিনি প্রচুর অনুশীলন করেছিলেন।
গরিমা কী বললেন?
গরিমা বলেছেন, “এক বা দেড় বছরের নেওয়া প্রস্তুতি আপনাকে সাফল্য এনে দিতে পারে। এই এক বা দুই বছরে আর কিছু করবেন না, কেবল ইউপিএসসি পাস করার দিকে মনোনিবেশ করুন। অন্য কোনো সরকারি পরীক্ষার জন্য প্রস্তুতিও নেবেন না।” গরিমা বলেছেন যে, এই প্রস্তুতির সময় তিনি দুই বছরের জন্য সমস্ত সোশ্যাল মিডিয়া অ্যাকাউন্ট মুছে ফেলেছিলেন। গরিমার আরো বলেন, “আপনি যখন পরীক্ষার জন্য প্রস্তুত হন এবং সাফল্য অর্জন করতে পারেন না, তখন নিরুৎসাহিত হওয়ার দরকার নেই, বরং যে ভুলগুলো করেছেন তার পুনরাবৃত্তি না করার চেষ্টা করুন। আপনি যদি এই উদ্দেশ্যে প্রস্তুতি নেন তবে আপনি অবশ্যই সফলতা পাবেন। জনগণকে বুঝতে হবে বিলম্ব হলেও সফলতা পাওয়া অসম্ভব নয়।”