News Desk : গোটা বিশ্বে জনসংখ্যা বৃদ্ধির পাশাপাশি বাড়ছে অনুর্বর জমির পরিমাণ। তাই ফসল উৎপাদন ক্ষমতাও দিনে দিনে কমে চলেছে। পরবর্তী প্রজন্মকে যাতে খাদ্য সংকটে পড়তে না হয়, সেই জন্য বিজ্ঞানীরা নতুন একটি গবেষণা করেছেন। এরপর তারা তৈরি করেছেন ‘ইলেকট্রনিক সয়েল’ অর্থাৎ বৈদ্যুতিক মাটি। আসুন জেনে নেওয়া যাক এই বৈদ্যুতিক মাটি সম্পর্কে কিছু কথা।
ই সয়েল কি?
বৈদ্যুতিক মাটি বিজ্ঞানীদের এক অভিনব আবিষ্কার। এটি এক ধরনের সাবস্ট্রেট, যাকে ই-সয়েল বলে। সুইডেনের লিংকোপিং বিশ্ববিদ্যালয়ের গবেষকেরা মাটি বিহীন চাষের জন্য একটি বৈদ্যুতিক পরিবাহীর মাধ্যমে কৃত্রিম মাটি তৈরি করেছেন। সেলুলোজ বায়োপলিমারের সঙ্গে পিইডিওটি নামের পরিবাহী মিশিয়ে কৃত্রিম এই মাটি তৈরি করা হয়েছে। হাইড্রোপনিক্স নামে পরিচিত এই পদ্ধতির মাধ্যমে কম শক্তির বৈদ্যুতিক উৎসের সঙ্গে বৈদ্যুতিক মাটিকে যুক্ত করে মাটির চিরায়ত রূপ বদলে ফেলেছেন গবেষকরা। গবেষকদের দাবি, মাটির মাধ্যমে বৈদ্যুতিকভাবে উদ্দীপ্ত করা হয় বলে চারার বৃদ্ধি ভালো হয়। এটি এক ধরনের হাইড্রোপনিক চাষ, যেখানে মাটি ছাড়াই গাছপালা বেড়ে ওঠে। গাছগুলি বেড়ে ওঠার জন্য জল, খনিজ পদার্থ এবং একটি স্তর প্রয়োজন। এইভাবেই গাছের শিকড় শক্ত হয়।
এই পদ্ধতিতে ফসল কীভাবে ফলানো হয়?
সাবস্ট্রেট, উদ্ভিদের শিকড়কে বৈদ্যুতিকভাবে বেড়ে উঠতে সাহায্য করে। এরফলে গাছগুলি দ্রুতহারে বেড়ে ওঠে। সুইডেনের লিংকোপিং ইউনিভার্সিটি এই গবেষণা করেছে। রিপোর্ট অনুযায়ী, বিশ্বব্যাপী জনসংখ্যা বৃদ্ধি, জলবায়ু পরিবর্তনের সমস্যার কারণে বর্তমান কৃষি পদ্ধতির মাধ্যমে বিশ্বের খাদ্য চাহিদা মেটানো সম্ভব নয়। তাই এই উপায় গ্রহণ করা হয়েছে। হাইড্রোপনিক পদ্ধতিতে শহুরে পরিবেশও খাদ্য উৎপাদন করা যায়। এমনকি আন্তর্জাতিক মহাকাশ স্টেশনেও এই প্রযুক্তি ব্যবহার করা হয় এবং বিজ্ঞানীরা সেখানেও এই পদ্ধতি অবলম্বন অনেক ধরনের ফসল ফলিয়েছিলেন।
দ্রুত ফলছে ফসল
বৈদ্যুতিক মাটি সংক্রান্ত গবেষণাটি ‘জার্নাল প্রসিডিংস অফ দ্য ন্যাশনাল একাডেমি অফ সায়েন্সেস’- এ প্রকাশিত হয়েছে। লিংকোপিং ইউনিভার্সিটির জৈব ইলেকট্রনিকস ল্যাবরেটরির বিজ্ঞানী এলেনি স্ট্যাভরিনিডো বলেছেন, এ ধরনের চাষাবাদে হাইড্রোপনিক স্তর হিসেবে ধানের তুষ, বালি, বেলে পাথরসহ অনেক কিছু ব্যবহার করা হয়। মাটির বিকল্প হিসেবে এসব স্তরে গাছের শিকড় বিকশিত হয়। ই-সয়েল পদ্ধতিতে বৈদ্যুতিক পরিবাহীর মাধ্যমে হাইড্রোপনিক্স চাষাবাদের বিশেষ সুযোগ তৈরি হয়েছে। এই গবেষণায় বলা হয়েছে যে, বিদ্যুতের সাহায্যে গাছের শিকড় ১৫ দিনে ৫০ শতাংশের বেশি বৃদ্ধি পেয়েছে।