Success Story: দেশের অন্যতম কঠিন পরীক্ষা ন্যাশনাল এলিজিবিলিটি কাম এন্ট্রান্স টেস্ট আন্ডারগ্র্যাজুয়েট (NEET UG)। অনেকে শত চেষ্টা করেও সাফল্য প্যান না। তবে, কথায় বলে ইচ্ছে থাকলে উপায় হয়। তাই কঠিন অধ্যবসায় ডাক্তারির স্নাতকের প্রবেশিকাতে সাফল্য নিয়ে এসেছে ২১ বছরের আরতি ঝা এর জীবনে। গত বছর অর্থাৎ ২০২৩ সালের গত ৭ মে হয়েছিল নিট ইউজি-র পরীক্ষা এবং ১৩ই জুনই ফল প্রকাশ করেছে ন্যাশনাল টেস্টিং এজেন্সি (NTA)। ২০ লক্ষের মধ্যে প্রায় ১১ লক্ষ ৪৫ হাজারের বেশি পরীক্ষার্থী উত্তীর্ণ হন ওই পরীক্ষায়। আরতি, দেশের ২০ লক্ষ পরীক্ষার্থীর মধ্যে ১৯২তম স্থান দখল করেন। ওবিসি ক্যাটাগরিতে তার স্থান ৩৩ এ। চলুন জেনে নেওয়া যাক আরতি ঝার সাফল্যের গল্পটি (Success Story)।
আরতির জীবন কাহিনী
আরতি হলেন আগরা শহরের বাসিন্দা। তার বাবা বিশ্বম্ভর ঝা, যিনি পেশায় একজন ট্রাক মেকানিক এবং আরতির মা একজন গৃহবধূ। আরতির পরিবারে রয়েছেন তার দুই ভাই, যারা স্টাফ সিলেকশন কমিশনের পরীক্ষার প্রস্তুতিতে ব্যস্ত এবং আরতির দিদি বিবাহিত। ছোট থেকেই আরতির চিকিৎসক হওয়ার স্বপ্ন। পরীক্ষায় এই র্যাঙ্কের পর তার ইচ্ছে দেশের সেরা প্রতিষ্ঠানে নয়া দিল্লির এমস থেকে এমবিবিএস পড়ে ভবিষ্যতে নিউরোলজিস্ট হওয়ার।
আরতির বাবা কী বলেছেন?
৪০ বছরের বেশি সময় ধরে বিশ্বম্ভর বাবু ট্রাক সারানো কাজ করেন, আর তার মেয়ে সর্বভারতীয় স্তরে এমন ফল করায় তারা অত্যন্ত গর্বিত হন। বিশ্বম্ভর বাবু সংবাদসংস্থাকে জানিয়েছেন, পরীক্ষায় ভাল ফল করার জন্য তার মেয়ে আরতি কীভাবে দিনের পর দিন ঘরের ফ্যান বন্ধ করে প্রস্তুতি চালিয়েছে, যাতে পড়তে পড়তে চোখে ঘুম না আসে। এমনকি, পরীক্ষার জন্য নিজের অসম্ভব মাথা যন্ত্রণাকেও উপেক্ষা করেছে আরতি। আর্থিক প্রতিকূলতার বাধা পেরিয়ে তাদের পরিবার থেকে এই প্রথম কেউ ডাক্তার হতে চলেছেন, যা তারা কল্পনাতেও ভাবতে পারেন না। মেয়ের এই সাফল্যে গোটা পরিবার আনন্দে উদ্বেল।
আরতি কী বলেছেন?
আরতি জানিয়েছেন যে, তার এই সাফল্যের তার পরিবারের অবদান রয়েছে। পরিবারের সবাই, বিশেষ করে বাবা যদি তার ডাক্তার হওয়ার স্বপ্নে বিশ্বাস না করতেন, তা হলে কোনো দিনই এমন ফল করা সম্ভব হত না তার পক্ষে। বাবা-ই তার অনুপ্রেরণা। আরতি ২০১৮ সালে সিবিএসই বোর্ড থেকে ৮৫ শতাংশ নম্বর নিয়ে দ্বাদশ পাশের পরে নিট ইউজি-র প্রস্তুতির জন্য এক বছর সময় নেন। সেই সময়ে একটি বেসরকারি স্কুলে ৫০০০ টাকা বেতনে ছাত্রছাত্রীদের পড়াতেন তিনি এবং সেই টাকা দিয়েই নিট ইউজির প্রস্তুতির জন্য কোচিং ক্লাসে ভর্তি হন। ২০২০ সালের পর থেকে তিনি পরীক্ষার জন্য কঠোর অধ্যবসায় শুরু করেন। এর পাশাপাশি তিনি বাড়িতে দশম এবং দ্বাদশ শ্রেণির পড়ুয়াদের টিউশন পড়াতে থাকেন। তিনি প্রথমে ঘড়ি ধরে না পড়ে বিভিন্ন টপিক মন দিয়ে পড়তেন।
আরতি আগামী পরীক্ষার্থীদের দিলেন টিপস
কোচিং ক্লাসে ভর্তি হওয়ার পর থেকে তিনি নিয়মিত ৬ থেকে ৮ ঘণ্টা করে পড়াশোনা শুরু করেন। তিনি পদার্থবিদ্যা এবং রসায়নে ভালো ছাত্রী হলেও বায়োলজি বা জীবনবিজ্ঞানের জায়গাটা একটু নড়বড়ে হওয়ার কারণে তিনি ক্রমাগত ন্যাশনাল কাউন্সিল অফ এডুকেশনাল রিসার্চ অ্যান্ড ট্রেনিং জীবনবিজ্ঞান-এর পাঠ্যবই খুঁটিয়ে পড়তেন। আরতি পরীক্ষার্থীদের জন্য জানিয়েছেন যে, প্রথমে নিজেদের ভুলভ্রান্তির জায়গাগুলি চিহ্নিত করে, সেগুলি শুধরে ক্রমাগত অনুশীলন, কঠোর পরিশ্রম এবং অধ্যবসায় চালিয়ে গেলেই পরীক্ষায় সাফল্য পাওয়া সম্ভব (Success Story)।