News Desk : প্রতিটি ভারতবাসীর যাতে মাথা গোজার ঠাঁই টুকু যাতে থাকে, সেই উদ্দেশ্য নিয়েই প্রধানমন্ত্রী আবাস যোজনা চালু করেছিল ভারতের কেন্দ্রীয় সরকার। কেন্দ্রীয় আবাসন এবং নগর উন্নয়ন মন্ত্রক, ২০২২ সালের মধ্যে এই প্রকল্পের কাজ শেষ করার উদ্যোগ নিলেও সেই পরিকল্পনা আদতে বাস্তবায়িত হয়নি, বরং টাকার অভাবে বাড়ি তৈরির কাজ একতকারে বন্ধ হয়ে যায় অনেকেরই। এর ফলে সেইসকল মানুষ বিপাকে পড়েন। এই কনকনে শীতের রাতে কোনো রকমে ত্রিপল টাঙিয়ে তারা বাস করছেন। তাদের প্রশ্ন একটাই, এই অবস্থা থেকে তারা কবে মুক্তি পাবেন?
কনকনে ঠান্ডায় ত্রিপল টাঙিয়ে থাকছেন মানুষ
এই প্রকল্পের অধীনে উপভোক্তাদের ন্যূনতম ২৫ বর্গমিটার জায়গার ওপর একটি পাকা বাড়ি করে দেওয়া হয়। এই প্রকল্পের আওতায় থাকা মানুষেরা জানান, তারা যখন প্রথম কিস্তির টাকা পেয়েছিলেন, তখন তারা বাড়ি তৈরি কাজ শুরু করেছিলেন। এইকারনে তারা তাদের আগের বাড়িও ভেঙে দেন। এরপরই ঘটে বিপত্তি। পরবর্তী কিস্তির টাকা না পেয়ে তাদের মাথায় হাত পড়ে। এরপর নির্মীয়মাণ বাড়ির পাশেই তারা ত্রিপল টাঙিয়ে কোনো রকমে থাকছেন। এই শীতের মধ্যে পরিবারের লোকজনকে নিয়ে এই ভাবে তাদের কষ্টের মধ্যে দিনযাপন করতে হচ্ছে। তারা জানেন না যে, ঠিক কবে বাকি কিস্তির টাকা তারা পাবেন। দেখতে দেখতে চলে আসবে বর্ষার সময়, আর সেই সময়ের মধ্যেই ওই আধা নির্মিত বাড়ি পুরোটা সম্পূর্ণ করা যাবে কী না সেই নিয়েও তাদের চিন্তার অন্ত নেই।
কত টাকা বিনিয়োগ করা হয় এই প্রকল্পে?
পৌরসভার চেয়ারম্যানরা জানিয়েছেন, একাধিক কিস্তিতে বাড়ির জন্য টাকা দেওয়া হলেও প্রথম কিংবা দ্বিতীয় কিস্তির পরে কেন্দ্র আর টাকা না দেওয়ায় অনেক জায়গাতেই এই বাড়ি নির্মাণের কাজ এগোচ্ছে না। প্রধানমন্ত্রী আবাস যোজনা প্রকল্পে প্রতিটি বাড়ি তৈরির খরচ ৩ লাখ ৬৮ হাজার টাকা, যার মধ্যে কেন্দ্র সরকার দেয় ১ লাখ ৫০ হাজার টাকা, রাজ্য সরকার দেয় ১ লাখ ৯৩ হাজার টাকা এবং বাকি ২৫ হাজার টাকা দেন উপভোক্তা। প্রধানমন্ত্রী আবাস যোজনা প্রকল্পে ১১৮.৬৩ লাখ বাড়ি তৈরির অনুমোদন দেওয়া হয়েছে বলে জানিয়েছেন কেন্দ্রীয় আবাসন এবং নগর উন্নয়ন মন্ত্রক, তবে এখনো পর্যন্ত এই প্রকল্পে ১১৩.৪৩ লাখ বাড়ি তৈরির কাজ শুরু হয়েছে, কিন্তু তার মধ্যে মাত্র ৭৮.৫৬ লাখ বাড়ি তৈরির কাজ সম্পূর্ণ হয়েছে। কেন্দ্রীয় সরকারের তরফ থেকে জানানো হয়েছে যে, ৮.১১ লাখ কোটি টাকা বিনিয়োগ করা হয়েছে এই প্রকল্পে। এমনকি, কেন্দ্রীয় অনুদান হিসাবে ২ লাখ কোটি টাকা দেওয়ার কথা বলা হয়েছে এই খাতে, তবে এখনো পর্যন্ত ১৫৪৪৩৭ কোটি টাকা রিলিজ করা হয়েছে।