How to Become IPS Officer: প্রতিটি মানুষের বড়ো কোনো সরকারি পদে চাকরি করার আকাঙ্ক্ষা থাকে। আইপিএস (IPS) হচ্ছে ভারতের সরকারি চাকরির এমন একটি পদ, যেখানে সম্মান এবং মাইনে দুইই রয়েছে। আইপিএস পদে চাকরি অনেকের কাছে স্বপ্ন। তবে, এই চাকরির ইচ্ছা থাকলেও অনেকে এই চাকরি সম্পর্কিত সকল বিষয় জানেন না। তাই আজকের প্রতিবেদনে আমরা আপনাদের আইপিএস চাকরি বিষয়ক সমস্ত তথ্য দিতে চলেছি। আসুন জেনে নেওয়া যাক বিস্তারিত।
আইপিএস এর সম্পূর্ণ নাম কী?
আইপিএস এর সম্পূর্ণ নাম হলো ইন্ডিয়ান পুলিশ সার্ভিস (Indian Police Service), অর্থাৎ ভারতীয় পুলিশ পরিষেবা।
আইপিএস অফিসারের কাজ কী?
একজন আইপিএস অফিসার আইন সংক্রান্ত বিভিন্ন কাজের সাথে যুক্ত থাকেন। এটি যেহেতু একটি উচ্চপদস্থ পুলিশের পোষ্ট, তাই একজন আইপিএস অফিসারের কাজ হলো আইন শৃঙ্খলা রক্ষা করা এবং বিভিন্ন অপরাধ দমন করা। কুখ্যাত অপরাধীদের গ্রেফতার করার জন্য উপযুক্ত ব্যবস্থা গ্রহণ করা একজন আইপিএস অফিসারের অন্যতম কাজ। এছাড়া, অপরাধ্মূলক কাজ দমন করার পাশাপাশি মাদক চক্র, নারী পাচার, মাওবাদী দমন ইত্যাদি কাজ করতে হয়। অভিজ্ঞতাসম্পন্ন আইপিএস অফিসারদের CBI, RAW, IB ইত্যাদি সংস্থায় নেতৃত্বের কাজে নিয়োগ করা হয়ে থাকে।
কীভাবে আইপিএস অফিসার হওয়া যায়?
ইউনিয়ন পাবলিক সার্ভিস কমিশন (UPSC) এর মাধ্যমে আয়োজিত হয় আইপিএস চাকরির পরীক্ষা। প্রতি বছর জানুয়ারি-মার্চ মাসে আইপিএস চাকরির পরীক্ষার জন্য ফর্ম ফিল আপ শুরু হয়। কয়েক লক্ষ পরীক্ষার্থী প্রতি বছর আইপিএস সহ আরো উচ্চ পদের জন্য ফর্ম ফিল আপ করেন এবং পরীক্ষায় বসেন। তাদের মধ্যে থেকে উপযুক্ত প্রার্থীরাই এই চাকরির জন্য নির্বাচিত হয়।
আইপিএস অফিসারের বিভিন্ন পদের নাম
Additional Commissioner of Police (ACP), Additional Superintendent of Police (ASP), Director General of Police (DGP), Deputy Inspector of Police (DIP), IPS Probationer, Inspector General of Police (IGP), Deputy Superintendent of Police (DSP) Superintendent of Police (SP), Senior Superintendent of Police (SSP), Deputy Inspector General of Police (DIP) ইত্যাদি।
বেতন
পদ অনুযায়ী আইপিএস অফিসারের বেতন ভিন্ন হয়। একজন আইপিএস অফিসারের মাসিক বেতন ৫৬,১০০ taka থেকে ২,২৫,০০০ টাকা হয়ে থাকে।
শিক্ষাগত যোগ্যতা
আইপিএস অফিসার হওয়ার জন্য কোনো স্বীকৃতিপ্রাপ্ত ইউনিভার্সিটি থেকে যেকোনো বিষয় নিয়ে গ্র্যাজুয়েশন পাশ করা থাকলেই ইউপিএসসির মাধ্যমে আইপিএস এর চাকরির পরীক্ষা দেওয়া যায়। আর তাছাড়াও B.Com, B.Sc, BCA, ইঞ্জিনিয়ারিং, মেডিক্যাল ডিগ্রি করা থাকলেও এই পদের জন্য আবেদন করা যায়।
বয়সসীম
এই পদের জন্য আবেদন করতে General ক্যাটাগরির প্রার্থীদের বয়স হতে হয় ২১ থেকে ৩২ বছর, OBC ক্যাটাগরির প্রার্থীদের বয়সে ৩ বছর ছাড় দেওয়া হয়, অর্থাৎ বয়স হতে হয় ২১ থেকে ৩৫ বছরএবং SC/ST শ্রেণীর ক্ষেত্রে বয়সে ৫ বছরের ছাড় দেওয়া হয়, অর্থাৎ বয়স হতে হয় ২১ থেকে ৩৭ বছর।
শারীরিক যোগ্যতা
উচ্চতা – General ক্যাটাগরির ছেলেদেরর ক্ষেত্রে ১৬৫ সেন্টিমিটার এবং মেয়েদের ১৫০ সেন্টিমিটার, SC/ST ছেলেদের ক্ষেত্রে ১৬০ সেন্টিমিটার এবং মেয়েদের ক্ষেত্রে ১৪৫ সেন্টিমিটার
উচ্চতা হতে হবে।
বুকের মাপ- ছেলেদের ৮৪ সেন্টিমিটার এবং মেয়েদের ৭৯ সেন্টিমিটার হতে হবে
দৃষ্টিশক্তি – এইপদের জন্য সাধারন চোখের ক্ষেত্রে দৃষ্টিশক্তি ৬/৬ অথবা ৬/৯ এবং দুর্বল চোখের ক্ষেত্রে দৃষ্টিশক্তি ৬/১২ অথবা ৬/৯ হওয়া আবশ্যিক।
নিয়োগ প্রক্রিয়া
এই পদে নিয়োগে ক্ষেত্রে তিনটি পরীক্ষার মাধ্যমে নিয়োগ করা হয়ে থাকে, যেমন প্রিলিমিনারি পরীক্ষা (Preliminary Examination), মেন পরীক্ষা (Main Examination), ইন্টারভিউ (Interview)।
(১) প্রিলিমিনারি পরীক্ষা- প্রিলিমিনারি পরীক্ষা হয় ৪০০ নম্বরের MCQ ধর্মী। এক্ষেত্রে জেনারেল স্টাডিজ এর দুইটি পেপার থাকে, যেখানে প্রতিটি পেপারে ২০০ করে নম্বর থাকে।
(২) মেন পরীক্ষা- মেন পরীক্ষা হয় ১৭৫০ নম্বরের, যেখানে মোট ৯টি পেপার থাকে। ২টি ৩০০ নম্বর করে কুয়ালিফাইং পেপার থাকে। এই দুই পেপার মিলিয়ে মোট ৬০০ নম্বর থাকে। ৫টি পেপার থাকে জেনারেল স্টাডিজের এবং বাকি ২টি পেপার থাকে কম্পালসারি।
(৩) ইন্টারভিউ- প্রিলিমিনারি এবং মেন পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হওয়ার পর ২৭৫ নম্বরের ইন্টারভিউ নেওয়া হয়। এই ইন্টারভিউতে প্রায় ৪৫ মিনিট ধরে প্রার্থীকে বিভিন্ন প্রশ্ন করে থাকেন কয়েকজন প্রশ্নকর্তা।
আইপিএস অফিসারের ট্রেনিং
প্রিলিমিনারি, মেন পরীক্ষা এবং ইন্টারভিউ প্রক্রিয়া শেষ হওয়ার পর একটি মেরিট লিস্ট প্রকাশিত হয়। ঐ লিস্টের র্যাঙ্ক অনুযায়ী আইপিএস চাকরি হয়ে থাকে। র্যাঙ্কের ভিত্তিতে IPS সহ IAS, IFS, IRS ইত্যাদি পদে প্রার্থীকে নিয়োগ প্রদান করা হয়।
মেরিট লিস্ট প্রকাশিত হওয়ার পর সমস্ত নির্বাচিত চাকরি প্রার্থীদের লাল বাহাদুর শাস্ত্রী রাষ্ট্রীয় প্রশাসনিক অ্যাকাডেমি বা LBSNAA তে পাঠানো হয়। এখানে তাদের ছয় মাসের ট্রেনিং করানো হয়। এরপর হায়দ্রাবাদে সর্দার বল্লভভাই প্যাটেল পুলিশ অ্যাকাডেমিতে ট্রেনিং হয়। এখানে আইন সংক্রান্ত এবং বিচার বিভাগীয় বিভিন্ন ট্রেনিং করানো হয় প্রার্থীদের।