News Desk : পশ্চিমবঙ্গ মধ্যশিক্ষা পর্ষদ এবার মাধ্যমিক স্তরের ছাত্রছাত্রীদের জন্য নিল এক অভিনব উদ্যোগ নিল। আর কত দিন বাকি মাধ্যমিক পরীক্ষার। চলতি বছরের ২রা ফেব্রুয়ারি থেকে ১২ই ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত গোটা রাজ্য জুড়ে আয়োজিত হবে মাধ্যমিক পরীক্ষা। জোরকদমে প্রস্তুতি নিচ্ছেন সকল পড়ুয়ারা। সম্প্রতি রাজ্যের স্টুডেন্ট সপ্তাহ পালন হয়েছে এবং সেখানে ছাত্রছাত্রীদের নতুন বছরের বই দেওয়ার কাজ সম্পন্ন হয়েছে। রাজ্যের স্কুল পড়ুয়ারা চলতি শিক্ষাবর্ষ থেকে নতুন পাঠ্যবই হাতে পেয়েছেন। এখানে নতুনত্ব হলো এই যে, পর্ষদ এবারের পাঠ্যবইতে একটি নতুন বৈশিষ্ট্য যুক্ত করে পড়ুয়াদের হাতে বইগুলি তুলে দিয়েছে।
পর্ষদের অভিনব উদ্যোগ
বইয়ের সাজসজ্জায় যেমন আনা হয়ে পরিবর্তন, ঠিক তেমনই প্রতিটি অধ্যায়ে ব্যবহার করা হয়েছে অত্যাধুনিক প্রযুক্তি। মাধ্যমিক ছাত্র-ছাত্রীদের প্রতিটি বইয়ের অধ্যায়ের শুরুতে কিংবা অধ্যায়ের মাঝে একটি করে কিউআর কোড দেওয়া হয়েছে, যেখান থেকে ছাত্রছাত্রীরা সেই বিষয়ের বা সেই অধ্যায়ের কোথাও কিছু বুঝতে অসুবিধা হলে সেই কিউআরকোড স্ক্যান করলেই পাবেন বিশেষ টিউটোরিয়াল ভিডিও। এর ফলে ঘরে বসেই মিলবে সমস্যার সমাধান। এখন প্রশ্ন হলো কীভাবে ছাত্র-ছাত্রীরা এর সুবিধা পাবে তার সঙ্গে অভিভাবক মহলে কি প্রতিক্রিয়া জানুন আজকের প্রতিবেদনে!
কিউআর কোড স্ক্যান করলেই মিলবে অনলাইন ক্লাস
মধ্যশিক্ষা পর্ষদ করোনা মহামারী কালে লকডাউনের সময় ছাত্রছাত্রীদের জন্য অনলাইনে ক্লাস থেকে বিনামূল্যে টেস্ট পেপার বিতরণ প্রভৃতি সুযোগ সুবিধা করে দিয়েছে। এরপর ফের ছাত্র-ছাত্রীদের সমস্যার সমাধানে আরো এক নতুন পদক্ষেপ নিলো মধ্যশিক্ষা পর্ষদ। সাধারণত নবম-দশম শ্রেণীর পড়ুয়াদের সরকারের তরফে চারটি পাঠ্যবই দেওয়া হয়। দুটি বাংলা বই, ইংরাজি বই এবং অঙ্ক বই। চলতি শিক্ষাবর্ষের ছাত্রছাত্রীরা যে সরকারি বইগুলি হাতে পেয়েছেন, তার প্রতিটি অধ্যায়ের শুরুতে এবং মাঝে ব্যবহার করা হয়েছে অত্যাধুনিক কিউআর কোড। আর ইন্টারনেটের সুবিধা এখন সকলেরই ঘরে ঘরে, তাই ছাত্রছাত্রীরা তাদের স্মার্টফোন নিয়ে এসে সেই কোড স্ক্যান করলেই অনলাইনে ক্লাস করার সুযোগ পেয়ে যাবে।
শিক্ষার্থীদের সমস্যা সমাধানে পর্ষদের এই উদ্যোগ
বেশ কিছু জটিল অংকের সমাধানের জন্য চ্যাপ্টারের মাঝে মাঝে কিউআর কোড রাখা হয়েছে। পর্ষদের এই অভিনব পদক্ষেপে ছাত্রছাত্রী বিশেষ উপকার পাবে বলে মনে করা হচ্ছে। অনেক ছাত্রছাত্রী রয়েছেন যারা স্কুলের পড়াশোনার উপর নির্ভরশীল। তাছাড়া সারা বছরব্যাপী স্কুলের নানান ছুটির কারণে স্কুলের পঠনপাঠন ব্যহত হয়। এর ফলে পরীক্ষার সিলেবাস কমপ্লিট হয় না। আবার পর্ষদের নির্দেশ থাকা সত্বেও অধিকাংশ স্কুলেই অতিরিক্ত ক্লাস নিয়ে সিলেবাস কমপ্লিট করা হয় না। এর ফলে বেশ সমস্যায় পড়তে হয় পড়ুয়াদের। তাই পড়ুয়াদের এই সমস্যার কথা মাথায় রেখে মধ্যশিক্ষা পর্ষদ এবার অনলাইন প্ল্যাটফর্মে টিউটোরিয়াল ভিডিয়ো আপলোড করে পড়ুয়াদের সমস্যার সমাধান করলো।
অভিভাবকদের প্রতিক্রিয়া
পর্ষদের এই অভিনব উদ্যোগকে অনেক অভিভাবকই প্রশংসা করছেন। আবার অনেক ক্ষেত্রে কিউ আর কোড কাজ করছে না বলে অনেকে দাবি জানিয়েছেন। এই সমস্যার সমাধান খুব শীঘ্রই মিলবে বলে WBBSE পর্ষদ উদ্যোগ নিচ্ছে। এই ধরনের অভিনব উদ্যোগ সত্যি ছাত্রছাত্রীদের সুবিধা দেবে এবং ভবিষ্যতে প্রযুক্তিকে কাজে লাগিয়ে ছাত্রছাত্রীদের পড়াশোনাকে আরো সহজতর, আকর্ষক করে তোলা সম্ভব হবে। প্রসঙ্গত, পাঠ্যবইতে অনলাইন ক্লাস গাইড ছাড়াও চলতি বছরের মাধ্যমিক প্রশ্নপত্রে কিউআর কোড রাখা হয়েছে। এতে প্রশ্নফাঁস রুখবে বলেই পর্ষদের আশ্বাস। মধ্যশিক্ষা পর্ষদ থেকে রাজ্য সরকার, চলতি বছরের মাধ্যমিক পরীক্ষা যাতে সুষ্ঠুভাবে সম্পন্ন হয়, এখন সেই উদ্দেশ্যে রয়েছে।
