News Desk : রাজ্য সরকারের তরফ থেকে নিয়ে আসা হলো সেবা সখি প্রকল্প। পশ্চিমবঙ্গের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় ২০১১ সালে ক্ষমতায় আসার পর থেক মানুষদের কল্যাণে বিভিন্ন ধরণের প্রকল্প নিয়ে এসেছেন। এই প্রকল্পটি লক্ষ্মীর ভান্ডারের চেয়েও বড় প্রকল্প, যার নাম সেবা সখী প্রকল্প। এতদিন যাবৎ রাজ্যের মহিলারা লক্ষীর ভান্ডার প্রকল্পে মাসিক ৫০০ এবং ১০০০ টাকা করে ভাতা পেতেন, তবে এবার এই প্রকল্প থেকে মহিলারা পাবেন মাসিক ৭৫০০ এবং ৯০০০ টাকা। গ্রাম ও শহর উভয় স্থানের মহিলারাই এই প্রকল্পের সুবিধা পাবেন। রাজ্য সরকার বাংলার নারীদের কর্মসংস্থানের জন্য এই প্রকল্পের ঘোষণা করেছে। আসুন তবে জেনে নেওয়া যাক এই প্রকল্প সম্পর্কে বিস্তারিত তথ্য।
সেবা সখি প্রকল্প কি?
সেবা সখি প্রকল্পের মূল উদ্দেশ্য হলো একদিকে রাজ্যের বেকার মহিলাদের কর্মসংস্থানের সুযোগ প্রদান করা এবং অপরদিকে রাজ্যের বিভিন্ন প্রান্তে বিশেষত গ্রামাঞ্চলে বয়স্ক এবং অসুস্থ মানুষদের স্বাস্থ্য পরিষেবা প্রদান করা। এই প্রকল্পের মাধ্যমে রাজ্যের বিভিন্ন গ্রামের প্রতিটি ব্লক থেকে ২০ জন করে এবং এবং বিভিন্ন শহরের প্রতিটি পৌরসভা থেকে ২০ জন করে মহিলাকে কাজ শেখানোর জন্য নির্বাচন করা হবে। ব্লাড প্রেসার মাপা, ওজন মাপা, ইনজেকশন দেওয়া, বিভিন্ন ওষুধ এবং চিকিৎসা বিজ্ঞান সম্পর্কে শিক্ষা, ড্রেসিং ও ব্যান্ডেজ করা এবং আরও অন্যান্য স্বাস্থ্য পরিষেবা সংক্রান্ত কাজ তাদের শেখানো হবে। এক মাসের একটি প্রশিক্ষণ চলবে। এরপর সরকারের তরফ থেকে তাদেরকে একটি শংসাপত্র প্রদান করা হবে, যার মাধ্যমে তারা ভবিষ্যতে বিভিন্ন সরকারি বেসরকারি ক্ষেত্রে কর্মসংস্থানের সুযোগ পাবে। সরকারের এই উদ্যোগে নারীদের কর্মসংস্থানের আকাল দূর হবে। রাজ্যের মহিলাদের আর্থিক স্বাবলম্বী ও ক্ষমতায়নের পক্ষে এটি এক গুরুত্বপূর্ণ পদক্ষেপ হতে চলেছে। সেই সঙ্গে বেকারত্বের সংখ্যা অনেকটাই কম হবে বলেও আশা করা হচ্ছে।
প্রশিক্ষণ চলাকালীন প্রকল্পের মাসিক বা দৈনিক ভাতা
সরকার সূত্রে জানা গেছে যে, প্রশিক্ষণ চলাকালীন গ্রামের মহিলাদের মাসিক দৈনিক ২৫৫ টাকা অর্থাৎ ৭৬৫০ টাকা এবং শহরের মহিলাদের প্রতিদিন ৩০০ টাকা অর্থাৎ মাসিক ৯০০০ করে টাকা ভাতা হিসেবে দেওয়া হবে।
সেবা সখি প্রকল্প রাজ্যের কোথায় শুরু হতে চলেছে?
রাজ্য সরকারের প্রতিনিধিরা রাজ্যের বিভিন্ন এলাকায় গিয়ে সমীক্ষার মাধ্যমে সেখানকার স্বাস্থ্য পরিষেবা সংক্রান্ত দিক খতিয়ে দেখে বিবেচনা করবেন কোন প্রার্থীরা এই প্রকল্পে নির্বাচিত হবার যোগ্য। এরপর সেই সমীক্ষার রিপোর্ট অনুযায়ী নির্বাচিত প্রার্থীদের প্রশিক্ষণ দেওয়া শুরু হবে। তবে, নতুন বছর সরকার কর্তৃক বলা হয়েছে যে, রাজ্যের সর্বত্র এক সঙ্গে এই প্রকল্পের কাজ শুরু করা হবে না। প্রাথমিক পর্যায়ে রাজ্যের চারটি জেলার নির্বাচিত ব্লক যথাক্রমে দক্ষিণ ২৪ পরগনা জেলার বারুইপুর, উত্তর ২৪ পরগনা জেলার রাজারহাট, হাওড়া জেলার আমতা এবং পূর্ব মেদিনীপুরের পাঁশকুড়া ব্লকে শুরু করা হবে পাইলট প্রোগ্রাম। এরপর ধীরে ধীরে গোটা রাজ্য জুড়ে বিস্তার লাভ করবে এর কাজ। তবে, সরকারের তরফ থেকে গ্রামাঞ্চলের এলাকাগুলিকে বিশেষত এই প্রকল্পের আওতায় আনার জন্য চেষ্টা চলছে, কারণ গ্রামে স্বাস্থ্য পরিষেবা অনুন্নত। তাই সেখানকার মানুষদের যত বেশি এই প্রকল্পের আওতাভুক্ত করা যাবে, তত বেশি সেখানকার স্বাস্থ্য পরিষেবা উন্নত হবে।