News Desk : এবছর শীতের মরশুমে টানা ২ থেকে ৩ দিনের বৃষ্টিতে চাষের ব্যাপক ক্ষতি হয় এর ফলে বাংলার কৃষকদের প্রায় সর্বস্বান্ত হওয়ার জোগাড়। আর অনেকেই এই ধাক্কা সামলে উঠতে পারেননি। তাই কীভাবে সংসার চালাবেন সেই নিয়ে মাথায় হাত পড়েছে কৃষকদের। যেই সময় ধান কেটে কৃষকরা ঘরে তোলেন, আলুর বীজ রোপণ করা হয়ে যায়, আর এর পাশাপাশি শীতের সবজি চাষ হয়, সেখানে গত বছরের ডিসেম্বর মাসের প্রথম সপ্তাহে মিগজাউমের দাপটে একটানা বৃষ্টিপাত হওয়ায় দক্ষিণবঙ্গে চাষের ব্যাপক ক্ষতি হয়। আর তাছাড়া এবছরের মধ্যবঙ্গ ও দক্ষিণবঙ্গের একাংশ জুড়ে গত ৩ থেকে ৪ দিন শীতের মধ্যে যে বৃষ্টি হয়, তাতেও চাষের ভালোমত ক্ষতি হয়েছে।
ক্ষতিপূরণ দেওয়া হবে ১১ লক্ষ কৃষককে
প্রাকৃতিক বিপর্যয়ের কারণে ক্ষতিগ্রস্ত হন অনেক সংখ্যক কৃষক। তবে, আর চিন্তা নেই,এবার বিরাট সুখবর রয়েছে কৃষকদের জন্য। রাজ্যের ১১ লাখ কৃষকের ব্যাংক অ্যাকাউন্টে সরাসরি মোট ১০২ কোটি টাকা দিতে চলেছে মমতা সরকার। মূলত ক্ষতিপূরণ বাবদ বাংলা শস্য বীমা প্রকল্পের আওতায় দেওয়া হবে এই টাকা। গত ডিসেম্বর মাসে আলিপুরদুয়ার সফরে গিয়ে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় বাংলা শস্য বিমার অধীনে ক্ষতিগ্রস্ত কৃষকদের ক্ষতিপূরণ দেওয়ার কথা ঘোষণা করলেও, সেই টাকা এখনো কৃষকদের ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্টে ঢোকেনি। এবার সব চিন্তার নিষ্পত্তি ঘটিয়ে কৃষকদের জন্য সাহায্যের হাত বাড়িয়েছে রাজ্য সরকার।
কৃষকদের ক্ষতিপূরণ বাবদ ১০২ কোটি টাকা বরাদ্দ
নবান্ন সূত্রে জানা খবর, রাজ্য সরকার, কৃষকদের ক্ষতিপূরণ বাবদ ১০২ কোটি টাকা বরাদ্দ করেছে, যার মাধ্যমে প্রায় ১১ লক্ষ কৃষক ক্ষতিপূরণ পাবেন। এর জন্য কৃষকদের বাছাই করা সহ যাবতীয় প্রক্রিয়া সম্পন্ন হয়েছে। আর মাত্র কয়েকটা দিনের মধ্যেই অনলাইন ট্রান্সফারের মাধ্যমে প্রত্যেক কৃষকের ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্টে সরাসরি এই টাকা ঢুকে যাবে। আসুন জেনে নেওয়া যাক কীভাবে শস্য বীমা করা যাবে।
কীভাবে বাংলা শস্য বীমা করবেন?
বাংলা শস্য বীমা করার জন্য দুয়ারে সরকার শিবিরে গিয়ে সংশ্লিষ্ট ফর্ম ভর্তি করে নিজের নাম নথিভুক্ত করতে হবে। এমনকি পঞ্চায়েত অফিস থেকেও এই ফর্ম পাওয়া যাবে। সেই ফর্ম পূরণ করে গুরুত্বপূর্ণ নথি তার সাথে একত্রিত করে জমা দিয়ে আপনি আবেদন করতে পারবেন। আবেদন করার কিছুদিন পর Bangla Shasya Bima নামক পোর্টালে প্রবেশ করে আপনার আবেদনের স্ট্যাটাস চেক করে নিতে পারেন। আসুন এবার জেনে নেওয়া যাক কী কী গুরুত্বপূর্ণ নথি প্রয়োজন।
গুরুত্বপূর্ণ নথি
বাংলা শস্য বীমা করতে আবেদনকারী কৃষকের আধার কার্ড, ভোটার আইডি, জমির নথি, ব্যাঙ্কের পাস বই, কৃষক বন্ধু আইডি নম্বর প্রভৃতি নথি জমা দিতে হবে।
এই ক্ষতিপূরণের ফলে বাংলার দরিদ্র কৃষকরা উপকৃত হবেন বলেই মনে করছে ওয়াকিবহাল মহল। উল্লেখ্য, ২০১৯ সাল থেকে শস্য বীমা প্রকল্প চালু করেছিল রাজ্য সরকার। প্রাকৃতিক বিপর্যয়ের কারণে কৃষি ক্ষেত্রে কৃষকদের বিভিন্ন রকম ক্ষতির মুখোমুখি হতে হয়। সেই ক্ষতি পূরণ করার জন্যই ভর্তুকি দিয়ে থাকে রাজ্য সরকার।