WBCHSE HS Semester System : ২০২৫ শিক্ষাবর্ষ থেকে উচ্চমাধ্যমিক শিক্ষা সংসদ চালু করতে চলেছে সেমিস্টার পদ্ধতিতে শিক্ষাব্যবস্থা। আজ আমরা আলোচনা করতে চলেছি উচ্চমাধ্যমিক স্তরে কীভাবে সেমিস্টার পদ্ধতি প্রয়োগ করা হবে, প্রশ্নের প্যাটার্ন, পরীক্ষার ধরন, হোম সেন্টার, ডিসটেন্স সেন্টারে উচ্চ মাধ্যমিকের পরীক্ষা সংক্রান্ত যাবতীয় তথ্য।
উচ্চ মাধ্যমিক স্তরে সেমিস্টার সিস্টেমের বিন্যাস
এতদিন পর্যন্ত একাদশ শ্রেণী এবং দ্বাদশ শ্রেণী এই দুই বছর মিলে উচ্চমাধ্যমিক স্তরের পাঠ্যক্রম তৈরি করা হতো, তবে এবার থেকে উচ্চমাধ্যমিক স্তরকে ৪টি সেমিস্টারে বিভক্ত করা হয়েছে, অর্থাৎ একাদশ শ্রেণীকে ২টি ভাগে এবং দ্বাদশ শ্রেণীকে ২টি ভাগে বিভক্ত করে মোট ৪টি সেমিস্টারে উচ্চমাধ্যমিক পাঠক্রম তৈরি করা হবে। প্রত্যেকটি সেমিস্টারের সময়সীমা ছয় মাস।
প্রথম সেমিস্টার
Admission – প্রতিবছর প্রত্যেকটি স্কুলে মে মাসের মধ্যে প্রথম সেমিস্টারের ভর্তি প্রক্রিয়া করা হবে। মাধ্যমিক দেওয়ার ৩ বছরের মধ্যেই ছাত্র ছাত্রীদের প্রথম সেমিস্টারের ভর্তি হতে হবে।
কোর্সের সময়সীমা – প্রথম সেমিস্টারের কোর্সের সময়সীমা হলো ৬ মাস। প্রথম সেমিস্টার শুরু হবে মে মাসে এবং শেষ হবে অক্টোবর মাসে।
রেজিস্ট্রেশন – ছাত্রছাত্রীদের যেমন প্রতিবছর উচ্চ মাধমিক পরীক্ষার জন্য একাদশ শ্রেণীতে রেজিস্ট্রেশন করতে হয়, ঠিক তেমনই সেমিস্টার পদ্ধতিতে প্রথম সেমিস্টারে রেজিস্ট্রেশন প্রক্রিয়া চলবে। উচ্চ মাধ্যমিক শিক্ষা সংসদের নিয়ম অনুযায়ী জানা গেছে যে, প্রতিবছর বিদ্যালয়গুলিকে ৩০শে জুনের মধ্যে ছাত্র ছাত্রীদের রেজিস্ট্রেশন প্রক্রিয়া সম্পন্ন করাতে হবে।
প্রথম সেমিস্টারের পরীক্ষা – MCQ টাইপ, OMR শিটে দিতে হবে।
সেন্টার – পরীক্ষা হবে নিজেদের স্কুলে।
পরীক্ষার সময় – সেপ্টেম্বর মাস।
পরীক্ষার ফলাফল – নিজেদের স্কুলের শিক্ষকরাইপ্রথম সেমিস্টারের পরীক্ষার খাতা দেখবেন এবং তারাই প্রথম সেমিস্টার পরীক্ষার ফলাফল প্রকাশ করবেন। প্রথম সেমিস্টারে পাশ করার জন্য ছাত্র ছাত্রীদের প্রতিটি বিষয়ে ৩০ শতাংশ নম্বর পেতে হবে।
দ্বিতীয় সেমিস্টার
Admission – প্রতিবছর প্রত্যেকটি স্কুলে নভেম্বর মাসের মধ্যে দ্বিতীয় সেমিস্টারের ভর্তি প্রক্রিয়া করা হবে।
কোর্সের সময়সীমা – দ্বিতীয় সেমিস্টার কোর্সের সময়সীমা হলো ৬ মাস। এই সেমিস্টারের পাঠ্যক্রম শুরু হবে নভেম্বর মাসে এবং তা শেষ হবে এপ্রিল মাসে।
পরীক্ষা – যদি ২০২৪ সালে কোনো পড়ুয়া একাদশ শ্রেণিতে ভর্তি হয়, তাহলে তাকে ২০২৫ সালে মার্চ মাসে দ্বিতীয় সেমিস্টারের পরীক্ষা দিতে হবে। সংক্ষিপ্ত উত্তরধর্মী এবং ব্যাখ্যামূলক উত্তরধার্মী প্রশ্ন থাকবে।
সেন্টার – দ্বিতীয় সেমিস্টারের পরীক্ষা পড়ুয়ারা নিজেদের স্কুলে দিতে পারবে।
পরীক্ষার সময় – মার্চ মাস।
পরীক্ষার ফলাফল – নিজেদের স্কুলের শিক্ষকরাই দ্বিতীয় সেমিস্টারের খাতা দেখবেন এবং তারাই ফলাফল প্রকাশ করবেন। ছাত্রছাত্রীদের প্রতিটি বিষয়ে ৩০ শতাংশ নম্বর পেতে হবে, এমনকি প্রতিটি বিষয়ের প্র্যাকটিক্যাল গুলিতেও ৩০ শতাংশ নম্বর পেতে হবে।
তৃতীয় সেমিস্টার
Admission – প্রথম এবং দ্বিতীয় সেমিস্টারে উত্তীর্ণ ছাত্র ছাত্রীরাই তৃতীয় সেমিস্টারের ভর্তি হতে পারবে। প্রতিবছর ৩০শে এপ্রিলের মধ্য তৃতীয় সেমিস্টারে ভর্তি প্রক্রিয়া সম্পন্ন হবে।
কোর্সের সময়সীমা – তৃতীয় সেমিস্টারের কোর্সের সময়সীমা হলো ৬ মাস। মে মাস থেকে শুরু হবে তৃতীয় সেমিস্টারের ক্লাস এবং তা শেষ হবে অক্টোবর মাসে।
এনরোলমেন্ট – এতদিন যেমন উচ্চ মাধ্যমিক পরীক্ষা দেওয়ার জন্য ছাত্র-ছাত্রীদের ফর্ম ফিলাপ করতে হতো, এবার থেকে ঠিক তেমন উচ্চমাধ্যমিক পরীক্ষার জন্য ছাত্র ছাত্রীদের এনরোলমেন্ট করতে হবে। সংসদের নিয়ম অনুযায়ী, প্রতি বছর ৩০শে জুনের মধ্য এই এনরোলমেন্ট প্রক্রিয়াটি সম্পন্ন করতে হবে।
পরীক্ষা – MCQ টাইপের প্রশ্ন হবে এবং ছাত্রছাত্রীদের OMR Sheet এ দিতে হবে।
সেন্টার – তৃতীয় সেমিস্টারের পরীক্ষাটি অন্য স্কুলে গিয়ে দিতে হবে ছাত্র ছাত্রীদের।
পরীক্ষার সময় – সেপ্টেম্বর মাস।
পরীক্ষার ফলাফল – তৃতীয় সেমিস্টারের খাতা অন্য স্কুলের শিক্ষকরা দেখবেন। এই পরীক্ষাতেও ছাত্র ছাত্রীদের প্রতিটি বিষয়ে ৩০ শতাংশ নম্বর পেতে হবে।
চতুর্থ সেমিস্টার
Admission – ছাত্র ছাত্রীদের চতুর্থ সেমিস্টারে ভর্তি হওয়ার জন্য প্রথম ও দ্বিতীয় সেমিস্টারে পাশ করা এবং তৃতীয় সেমিস্টারে ভর্তি হয়ে এনরোলমেন্ট করা বাধ্যতামূলক। প্রতি বছর এপ্রিল মাসের মধ্যে চতুর্থ সেমিস্টারের ভর্তি প্রক্রিয়া সম্পন্ন করা হবে।
কোর্সের সময়সীমা – চতুর্থ সেমিস্টারের সময়সীমা হলো ৬ মাস। এর পাঠ্যক্রম শুরু হবে নভেম্বর মাসে এবং তা শেষ হবে এপ্রিল মাসে।
পরীক্ষা – সংক্ষিপ্ত উত্তরধর্মী এবং ব্যাখ্যামূলক উত্তরধার্মী প্রশ্নে পরীক্ষা হবে।
সেন্টার – অন্য স্কুলে গিয়ে পরীক্ষা দিতে হবে।
পরীক্ষার সময় – এপ্রিল মাস।
পরীক্ষার ফলাফল – চতুর্থ সেমিস্টারের খাতা দেখবেন অন্য স্কুলের শিক্ষকরা। এই সেমিস্টারেও প্রতিটি বিষয়ে ৩০ শতাংশ নম্বর পেতে হবে। আর এই সেমিস্টারে পাশ করলে তবেই ছাত্র-ছাত্রীরা উচ্চ মাধ্যমিক পরীক্ষায় সফল ভাবে উত্তীর্ণ হতে পারবে।